দেবিদ্বার(কুমিল্লা)সংবাদদাতা
চেয়ারম্যানের লোকেরা আমাকে ‘চোর চোর’ বলে দৌড়িয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে। চেয়ারম্যান নিজেও আমাকে বেদম পিঠিয়েছে। আমি বারবার বলেছি, কাকা আমি রোজা আমাকে মারবেন না তারপরও কেউ শোনেননি। একের পর এক কিলঘুষি লাথি ও লাঠি দিয়ে আমাকে পিঠিয়েছে। আমি দৌঁড়িয়ে পালাতে চেষ্টা করেও পালাতে পারিনি। পরে রাস্তায় একটি চলন্ত অটো রিক্সায় লাফ দিয়ে ওঠে কোন রকম আমার জীবন বাঁচিয়েছি।
কোন অন্যায় ছাড়া এভাবে একজন চেয়ারম্যান নিজে ও তার ভাড়াটে লোক দিয়ে মারতে পারে না। কুমিল্লার দেবিদ্বারে গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে হতদরিদ্র দিন মজুরদের জন্য সরকারী বরাদ্দের খাদ্য সহায়তার অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ইউএনও কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় মারধরের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ইউনিভার্সিটি অফ লিভারেল আটর্স বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ের ৩য় বর্ষের ছাত্র ও গুনাইঘর ইউনিয়নের ছেপাড়া গ্রামের আবদুস কুদ্দুস সরকারের ছেলে রাকিব বিন কুদ্দুস।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার ছেপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে রাকিব আরও অভিযোগ করে বলেন, আমি এখন চেয়ারম্যানের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারি না, সে যেকোন সময় আমার প্রাণে মেরে ফেলবে। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাই, এ ঘটনায় যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয়, আমি সঠিক বিচার দাবি করছি। রাকিব লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, আমার দোষ আমি প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠির হক সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণ যারা পাইনি তাদের পক্ষে কথা বলেছি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি এটাই কি আমার অপরাধ?
এর আগে মারধরের শিকার রাকিব কুদ্দুস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসানের নিকট গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে ত্রাণ ও মসজিদের তালিকারণের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় মারধর ও প্রাণনাশের ঘটনায় তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৌখিক আবেদন করেন । মারধরের শিকার রাকিব বিন কুদ্দুস গুনাইঘর উত্তর ইউপি’র ছেপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস সরকারের ছেলে এবং একটি বেসরকারি প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় ৩য় বর্ষের ছাত্র।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গুনাইঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, আমার অফিসের সামনে এসে ওই যুবক মিথ্যা অভিযোগ করায় ইউপি সদস্য জব্বারের লোকজন রাস্তায় ওই যুবককে মারধর করেছে বলে শুনেছি। তখন আমি আমার অফিসের ভেতরে ছিলাম। আমার ছেলেরা ওই সময় কে-কোথায় ছিল সেটা আমি জানি না। তবে আমার অফিসের সামনে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।
এ ব্যাপারে ইউওনও রাকিব হাসান বলেন, মারধরের ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ শুনেছি.তবে আমার কাছে কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি, লিখিত অভিযোগ পেলে আমি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মে বিকালে গুনাইঘর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের অস্থায়ী কার্যালয়ে খাদ্য সহায়তা ছাড়াও মসজিদে অর্থ বরাদ্দের তালিকায় না থাকার বিষয়ে কথা বলায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত ও লাঞ্ছিত করা হয় রাকিবকে।
Leave a Reply