অনলাইন ডেস্ক:
টানা কয়েকদিনে দাম বাড়ার পর এখন পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা দরে। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে দাম ঠেকেছে ৬০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনায় ত্রাণ বিতরণ ও বন্যার কারণে অন্যান্য সবজির উৎপাদন কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে আলুর ওপর। তবে বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য হিমাগারগুলোতে মনিটরিংয়ের দাবি জানান তারা।
তবে কয়েক ধাপে আলুর দাম বাড়ার পেছনে চার কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ভিন্নতা রয়েছে পাইকার ও খুচরা বাজার ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত এ চার কারণের। তবে ক্রেতারা একমত নন বিক্রেতাদের সঙ্গে। ক্রেতারা বলছেন, আলুর দর বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে এ চিত্র উঠে আসে।
বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি খুচরায় বিক্রমপুর আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে আর রংপুর ও রাজশাহীর আলুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ভর্তার আলুর এক কেজির দাম চাওয়া হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আর কারওয়ানবাজার পাইকারী বাজারে (আড়তে) প্রতিকেজি বিক্রমপুর আলু (পাইকারী) বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকা আর রংপুর ও রাজশাহীর আলুর বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে।
পাইকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আলুর ব্যবহার উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে এ কারণে আলুর মজুদ শেষ হয়ে আসছে। তাছাড়া আলুর উৎপাদন কম হওয়া, বন্যায় নতুন আলুর রোপণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া। এছাড়া নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলুরও দাম বাড়ে সমান্তরালভাবে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলু পাইকার বাজার থেকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিতে চার ধাপে টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে রয়েছে মেতি (আঞ্চলিক ভাষা, কুলি) খরচ, বোর্ডভাড়া (আলু কেনার পর বাজারে যেখানে স্তুপ করা হয়) ও চাঁদা, পরিবহন ভাড়া ও দোকান ভাড়া। এই চার কারণে প্রতিকেজিতে প্রায় পাঁচ টাকা খরচ পড়ে বলেও জানান তারা।
আলুর দর বাড়া নিয়ে কারওয়ানবাজারের ক্রেতা তারেক বলেন, যখন দেশের মধ্য একটা জিনিসের সংকট দেখা দেবে তখন অন্যটির দাম বাড়ানো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আলুর দাম বাড়ার পেছনেও কাজ করেছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না হওয়া আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে আলু।
কাঁঠাল বাগান বাজারের মনির বলেন, পাইকারী বাজারে আলুর দর বাড়ার অন্যতম কারণ। এর বাইরে মেতি খরচ, বোর্ডভাড়া ও চাঁদা, পরিবহন ভাড়া ও দোকান ভাড়া আছে। তবে আলুর দাম পাইকার বাজারে কমলে খুচরাতেও দাম কমে আসবে বলেও আশাবাদী এ ব্যবসায়ী।
কারওয়ানবাজারের আড়তদার (পাইকার আলু বিক্রেতা) ও শাপলা ট্রেডার্সের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, হঠাৎ আলুর দাম বাড়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো করোনার ভয়াবহ সময়ে ত্রাণ বিতরণে ব্যাপকহারে আলুর ব্যবহার হয়েছে। এতে আলুর আড়তসহ স্থানীয় বাজারে আলুর সরবরাহ কমে যায় এতে দাম বাড়তে থাকে। এছাড়া আরো কয়েকটি কারণ রয়েছে আলুর দাম বাড়ার পেছনে। এর মধ্যে রয়েছে জমিতে আলুর উৎপাদন কম হওয়া, চলমান বন্যায় নতুন আলুর ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, অন্যান্য সবজির দাম বাড়ার সঙ্গেও আলুর দাম বাড়ার কারণ জড়িত আছে।
তিনি বলেন, এখন স্থানীয় পর্যায়ে আলু খুব বেশি নেই, আলুর যোগান কমে আসায় দাম বাড়ছে। বাজারে নতুন আলু উঠলে দাম কমবে।
Leave a Reply