(আব্দুল্লাহ আল মানছুর, কুমিল্লা)
কুমিল্লা নগরীর ঠাকুড়পাড়াস্থ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের স্কুল ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষার্থী শামসুন নাহার মীম (১৫) কলেজের হোস্টেলের আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটির রহস্য উৎঘাটনে তদন্ত নেমেছে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শামসুন নাহার মীম চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ভিতরচর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল মোত্তালেবের একমাত্র কন্যা। মীমের আত্মহত্যার ঘটনায় পুরো চৌদ্দগ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রবিবার দুপুরে স্কুল ছুটি শেষে মীম হোস্টেলে আসর পর হঠাৎ কওে নিখোঁজ হয়ে যায়। দুপুরের খাবারের জন্য হোস্টেলের ডাইনিং না যাওয়া মীমের বান্ধবীরা রাবেয়া বসরী হোস্টেল ইনচার্জ রুমি আক্তারকে জানানো হয়।
পুরো বিল্ডিং খুঁজতে গিয়ে বিকেলে ২য় তলার রুমের পাশে অরক্ষিত রুমে সিলিং ফ্যানের সাথে অজ্ঞান অবস্থায় মীমের নিথর দেহ ঝুলে থাক। এ সময় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এসএসসি পরীক্ষার্থী মীমের আত্মহত্যার ঘটনায় পুরো রাবেয়া বসরী হোস্টেলে ও স্বজনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের মীম কেনই বা আত্মহত্যা করেছে? এ আত্মহত্যার পেছনে কি কোন রহস্য আছে কি? এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত শামসু নাহার মীমের সহপাঠীরা জানান, ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী নয়ন নামের একটি ছেলে মীমকে খুব বিরক্ত করতো । সে প্রতিদিনই স্কুলের সামনে এসে মীমকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। মীমকে প্রেমের প্রস্তাব ও বিরক্ত করার বিষয়টি জানতে পেরে কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের কর্তৃপক্ষ নয়নকে বিদ্যালয় হতে বহিস্কার করেন।
স্কুল হতে বহিস্কার করার পরেও নয়ন মীমকে পছন্দ করার কারনে সে প্রতিদিনই রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকতো এমনকি মীমের সাথে তখন তাহার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নয়ন কিছুদিন মীমের সাথে সর্ম্পক করার পরে সে বিদেশে পাড়ি দেয় ।
হোস্টেলে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষদ্ধ থাকলেও শামসুন নাহার মীম লুকিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো, গত কয়েকদিন আগে মীমের মোবাইল ফোন হোস্টেল ইনচার্জ রুমি ম্যাডাম নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে লুকিয়ে আবার সে ব্যবহার করতো। এমনকি ঔ মোবাইল ফোন হতে নয়নের সাথে মীম নিয়মিত যোগাযোগ করতো বলে জানা যায় । সহপাঠীদের দাবি-মীমের আত্মহত্যার পিছনে কে রয়েছে তা হয়তো মোবাইল ট্রেকিং করলে বেড়িয়ে আসবে !
এ ঘটনার মামলা তদন্তকারী পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেষ্টিগেশনের পুলিশ পরিদর্শক রকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা মীমের আত্মহত্যার পেছনে কি রয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বের করবো। ঘটনাস্থল হতে মীমের আত্মহত্যার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
কুমিল্লা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেষ্টিগেশন এর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমান গণি পিপিএম বলেন, আমি গোপন সংবাদে কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল ছাত্রী হোস্টেলে মীম নামের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরে পুলিশ পরিদর্শক রকিবুল ইসলামকে তাৎক্ষনিক ফোর্স নিয়ে সেখানে পাঠাই।
উল্লেখ্য,শামসুন নাহার মীম ২০১৫ সালের ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া অবস্থায় কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে ভর্তি হয় এবং চলতি বছরেই হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করার সিদ্বান্ত নেওয়ায় তাহার মা মনোয়ারা বেগম মীমকে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের রাবেয়া বসরী নামক ছাত্রী হোস্টেলে ভর্তি করান।
Leave a Reply