অনলাইন ডেস্ক:
বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার সেই মুক্তামণি আর নেই। বুধবার সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী মুক্তামণির। বাদ জোহর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
সাতক্ষীরার কামারবাইশালের মুদির দোকানদার ইব্রাহিম হোসেনের দুই যমজ মেয়ে হীরামণি ও মুক্তামণি। জন্মের দেড় বছর পর থেকে মুক্তামণির সমস্যা শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তা ফুলে কোলবালিশের মতো হয়ে যায়। মুক্তামণি বিছানায় বন্দী হয়ে পড়ে।
সাতক্ষীরা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা চিকিৎসা চলে। তবে ভালো হয়নি বা ভালো হবে, সে কথা কেউ কখনো বলেননি। গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে খবর প্রকাশ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনায় আসে মুক্তামণির খবর। গত বছরের ১১ জুলাই মুক্তাকে ভর্তি করানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে বার্ন ইউনিটের কেবিনে ছিল ছয় মাস। গত বছরের ১২ আগস্ট তার হাতে অস্ত্রোপচার হয়। তার ডান হাত থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করেন চিকিৎসকেরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দুই দফায় তাঁর হাতে লাগানো হয়। তবে সাময়িকভাবে হাতের ফোলা কমলেও তা সম্প্রতি আগের চেয়েও বেশি ফুলে গিয়েছিল। রক্ত জমতে থাকে ফোলা জায়গায়। আর ড্রেসিং করতে কয়েক দিন দেরি হলেই হাত থেকে দুর্গন্ধ বের হতো। আগের মতো হাতটিতে পোকাও দেখা যায়।
গত সোমবার (২১ মে) বিডি২৪লাইভ ডট কমের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মুক্তমণির বাড়িতে যায়। তখন মুক্তামনি বলেন, ‘রোগটা আমার সারা শরীর গ্রাস করে ফেলেছে। আমার সব বন্ধু প্রতিবেশিরা কেউ এখন আমার কাছে আসেনা। রোগ তো ছোঁয়াচো না। তবে তারা কেন আমাকে অবহেলা করছে! আমি নিজেও সর্বচ্চো শক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছি ডাক্তাররা যে জিতে সে জন্য। কিন্তু জানি জয়টা আমার রোগের-ই হবে।’
মুক্তামণি আরও বলেন, ‘কেউ আমার চিকিৎসার ত্রুটি করেনি। সাতক্ষীরাসহ দেশের সবাই আমাকে খুব সাহায্য করেছে। সকল সংবাদকর্মীরা আমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে। তাদের কারণে আজ আমার বেঁচে থাকা। না হলে অনেক আগেই মরে যেতাম। সংবাদ প্রকাশের ফলে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আসলে তিনি আমার চিকিৎসা করান। ৬ দফায় অস্ত্রপাচার করান। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সকলের কাছে দোয়া চাই।’
কিন্তু না ফেরার দেশ চলে যায় মুক্তমনি। মৃত্যুর আগে মুক্তামণি তার বাবকে কাছে ডাকেন। তার ভালো লাগছে না বলে জানায়। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে সে পানি চায় তার (বাবার) কাছে। এরপর পানি পান করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। খবর শুনে চিকিৎসক ফরহাদ জামিল ছুটে আসেন। তিনি মুক্তামণির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত
Leave a Reply