অনলাইন ডেস্ক:
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সাত সদস্যকে আটকের কথা জানিয়েছে র্যাব। এই সদস্যরা ‘জঙ্গিবাদকে হ্যাঁ বলুন’ এবং ‘গাজওয়াতুল হিন্দ ও এসো কাফেলাবদ্ধ হই’ নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিল বলেও জানিয়েছে বাহিনীটি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করার কথা জানিয়েছেন ব্যার কর্মকর্তারা। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিষ্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
র্যাব বলছে, আটকরা বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির জন্য ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হচ্ছিল। কিন্তু ধরা পড়ে যাওয়ায় পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
আটকরা হলেন: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের কামাল উদ্দিন, কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ঘোরাশাল এলাকার সিফাত, চট্রগ্রামের চাঁদপুর মতলবের দিদারুল ইসলাম, শেরপুর কাজীর চর এলাকার রিফাতুল্লাহ সাব্বি খান, টাঙ্গাইল সদরের দুপুরিয়া ইউনিয়নের শীতল মিয়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর থানার শাখারীকাঠি ইউনিয়নের মুহিবুল রহমান ওরফে আবু উম্মা ওরফে বাবু এবং ফরিদপুরের সালথা থানার মাওলানা সায়েদুদ্দিনের এরশাদুল হক টিটু।
এর মধ্যে মুহিবুল রহমান ওরফে আবু উম্মা ওরফে বাবু ও এরশাদুল হক টিটু বারিধারার ব্লুমফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজির শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার বিকালে কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল (এএসসি) এমদাদুল হাসান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা তারা জানতে পারেন আনসার আল ইসলামের কয়েকজন সদস্য রাজধানীতে সক্রিয় হবার চেষ্টা করছে। তারা মুদগা, যাত্রবাড়ী ও বাড্ডা এলাকায় প্রতিনিয়ত নাশকতার পরিকল্পনা করে আসছিল।
পরে মুগদা ও যাত্রাবাড়িতে অভিযান চালিয়ে আজ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুইজনকে বারিধারা এলাকা থেকে আটক করা হয়।
এমদাদুল হাসান জানান, মুহিবুল রহমান ওরফে আবু উম্মা ওরফে বাবু আনসার আল ইসলামের সমন্বয়ক এবং পরিকল্পনাকারী। তিনি গোপনে দাওয়া-হালকার কার্যক্রম পরিচালনা করত। ফেসবুক পেজ ‘জঙ্গিবাদকে হ্যাঁ বলুন’, ‘গাজওয়াতুল হিন্দ ও এসো কাফেলাবদ্ধ হই’ এর সদস্য ছিলেন। তিনি রাজধানীর বারিধারার ব্লুমফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজির শিক্ষকতা করতেন।
আর এরশাদুল হক টিটু একজন রিক্রুটার ও মোটিভেটর। তিনিও ইংরেজি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ‘রিক্রুটার’ ও ‘মোটিভেটর’ ছিলেন। জঙ্গিবাদকে উস্কে দেওয়া ফেসবুক পেজগুলোতে বক্তব্য, অডিও, ভিডিও এবং জিহাদী পোস্ট শেয়ার করতেন। এছাড়া সংগঠনের কর্মীদের জিহাদে উদ্ধুদ্ধ করতেন।
র্যাবের দেয়া তথ্যমতে, মুহিবুল বোমা তৈরিকে বেশ দক্ষ এবং রাজধানীতে আনসার আল ইসলামের আঞ্চলিক সমন্বয়ক ছিলেন।
র্যাব-৩ এর এএসসি আরও জানান, মহিবুল ও টিটু ছাড়া বাকি পাঁচ জন তাদের নিজ জেলার সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন। তারা রাজধানীতে তাদের সাংগঠনিক বৈঠকে এসেছিল।
আটকৃতদের কাছ থেকে চারটি জিহাদী বই, একটি ড্রিল মেশিন, লোহার হাতুরি, এক কেজি তারকাটা, দেড় কেজি পটাশিয়াম নাইট্রেট, এককেজি সালফার, লোহার বল, তিন বোতল এসিড, চাকু, এলার্ম ঘড়ি ও ১৬০টি কাঁচের মার্বেল পাওয়া যায় বলেও জানিয়েছে র্যাব।
Leave a Reply