রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২২ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুমিল্লার তিতাসে শামসুল হুদা নামে এক পল্লী চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে পিস্তল ঠেকিয়ে ৩৯ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সাগরকে (৩২) ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । সোমবার (৯ আগস্ট) সকাল ৬ টায় ঢাকার ডেমরা থানার মাতুইল এলাকাতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আটক করা হয়েছে।

আটককৃত সন্ত্রাসী সাগর শাহপুর গ্রামের মৃত হাবুল মিয়ার ছেলে ও মজিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের চাচাতো ভাই। সাগরের বিরুদ্ধে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও অস্ত্রসহ কমপক্ষে ৩০টি মামলা রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তিতাস থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল। তিনি জানান, ভিডিওটি নজরে আসার পর থেকে রাতভর গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত ছিল । সকালে তার অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়েছে। তার কাছে থাকা পিস্তলটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

সন্ত্রাসী সাগর আটকের পর ভোক্তভোগী পল্লী চিকিৎসককে শামসুল হুদা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী সাগর এলাকাতে যেন আর প্রভাব দেখাতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে । পুলিশ দ্রুত সময়ে তাকে আটক করেছে শুনে খুশি হয়েছি। আমরা আর কত চুপ থাকবো । দশ বছর ধরে নিরবে চাঁদা দিয়ে আসছি। এলাকায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে না। আমি জীবনের মায়া না করে ভিডিও ফেসবুকে দিয়েছি। আমি চাই এসব চাঁদবাজদের স্থান যেন এই সমাজে না হয়। তিতাসবাসী অতিষ্ঠ সন্ত্রাসী সাগরের জ্বালায় । আমি তার ফাঁসি চাই । এখনও আমি ভয়ে আছি। কারণ তার সহযোগীরা আমার আশে-পাশে রয়েছে।

উল্লেখ্য রবিবার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের শান্তির বাজারে শামসুল হুদা নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদাবাজির একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় ।রোববার (০৮ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের শান্তির বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে নিজের জীবন রক্ষা ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন ওই পল্লী চিকিৎসক।

পল্লী চিকিৎসক শামসুল হুদা জানান, শনিবার (০৭ আগস্ট) রাতে আমার বাসায় একদল ডাকাত হামলা করে। কিন্তু প্রতিবেশীরা টের পেলে তারা পালিয়ে যায়। রোববার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া সরকারসহ গণ্যমান্য বক্তিদের জানানো হয়। বিকেল ৪টায় সাগর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চেম্বারে ঢুকে প্রথমে আমাকে হুমকি দেয়। পরে পিস্তল বের করে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

ভয়ে আমি নগদ ও বিকাশে ৩৯ হাজার টাকা দেই। সে টাকা নিয়ে আরও দুই লাখ টাকার জন্য চাপ দিয়ে যায়। না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। সে আগেও আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলাম। সকলের সহযোগিতায় এখন নিরাপদে আছি।

আরও পড়ুন

%d bloggers like this: