অনলাইন ডেস্ক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ১৮ ডিসেম্বর ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ মূল স্লোগান সংবলিত এই ইশতেহারে ২১ বিশেষ অঙ্গীকারকে প্রাধান্য দিচ্ছে দলটি।ওইদিন হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বিকেল সকাল ১০টায় ইশতেহার তুলে ধরবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই ইশতেহার তুলে ধরা হবে বলে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।৬৪ পৃষ্ঠার এই ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশসীমা বাড়ানোর বিষয়েও অঙ্গীকার থাকছে।
আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশেষ উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। সেটি হলো— ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকুরি না পায় বা কাজ না পায়।’
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর এই উক্তিকে সামনে রেখেই ২১টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে। এগুলো হলো— আমার গ্রাম- আমার শহর: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ; তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা; দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ; নারীর ক্ষমতায়ন; লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ; পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা; সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল; মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন; গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা; সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি; দারিদ্র্য নির্মূল; সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি; সকল স্তরে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা; সার্বিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার; আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা; দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন; ব্লু-ইকোনমি, তথা সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন; নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা; প্রবাসী কল্যাণ কর্মসূচি এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন।
আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে রয়েছে সাতটি অধ্যায়। প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে ইশতেহারের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে পটভূমি, তৃতীয় অধ্যায়ে রয়েছে গত দুই মেয়াদে সরকারের সাফল্য ও আগামী মেয়াদের জন্য পরিকল্পনা, চতুর্থ অধ্যায়ে দেশের অর্থনীতির চিত্র, পঞ্চম অধ্যায়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, ষষ্ঠ অধ্যায়ে ভবিষ্যৎ দিক দর্শন এবং সপ্তম অধ্যায়ে রয়েছে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান। এসব অধ্যায়ের মধ্যে আবার উপ-অধ্যায়ে ভাগ করে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন বিষয়।
আওয়ামী লীগ সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, ভবিষ্যত দিকদর্শনে আজকের বাংলাদেশ আগামীতে কোথায় থাকবে, কী কী পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কর্মসূচিতে এগিয়ে যাবে— সেই রূপরেখা রয়েছে এবারের ইশতেহারে। এতে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনসহ জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে এই নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দও শেষ হয়েছে। এখন শুরু হয়েছে নির্বাচনি প্রচারণা।
১২ ডিসেম্বর থেকে দুইদিন ব্যাপী নির্বাচনি জনসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে শুরু এই গণসংযোগ ১৩ ডিসেম্বর শেষ হয় ঢাকার সাভারের পথসভার মাধ্যমে।
Leave a Reply