অনলাইন ডেস্ক:
আজ ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ইতিহাসের এই দিনেই সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। গতবারের মতো এবারও দিবসটি এসেছে ভিন্ন আবহে।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হতো। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশত্যাগ করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। গত বছর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়।
১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। সেদিন ভোররাতে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই তারা থামেনি, বুলেটের আঘাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
নির্মম ওই হত্যাযজ্ঞে প্রাণে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, আবদুল নাঈম খান রিন্টু, কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন।
ওই ঘটনার সময় মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টকে প্রথম শোক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। তবে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবারও ১৫ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যদিও ফেসবুকের মতো সামাজিকমাধ্যমে আলোচনা ও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ১৫ আগস্ট উপলক্ষ্যে শোক জানানো হয়েছে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেখানে পুলিশের সাঁজোয়া যান (এপিসি) ও রায়টকার মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেল থেকেই এলাকার প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন ও পথচারীর চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। একইসঙ্গে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।
৩২ নম্বর এলাকায় ‘সন্দেহজনক’ ঘোরাঘুরির অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও রাত ১২টার দিকে শুক্রাবাদ মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
Leave a Reply