অনলাইন ডেস্ক:
হুট করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়া জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা একইভাবে দলটি ছাড়লেন। গত ১০ অক্টোবর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বরাবর রেজিস্টার্ড ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন এইচ এম এরশাদের গড়া দলটির এই প্রেসিডিয়াম সদস্য। এছাড়া জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ সব পদ পদবি থেকেও পদত্যাগ করেছেন তিনি।
জাতীয় পার্টির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র পূর্বপশ্চিমকে জানিয়েছে, ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়ে পারেননি সোহেল রানা। দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভে-অভিমানে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের নেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের ভিপি মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নাম নিয়ে পরে চলচ্চিত্র অঙ্গন মাতালেও আওয়ামী লীগের সঙ্গেই ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি আকস্মিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। জাতীয় পার্টির তখনকার চেয়ারম্যান এরশাদের নির্বাচন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতির পদেও সোহেল রানাকে বসানো হয়েছিল। সেই পদও ছেড়েছেন তিনি।
সোহেল রানার জাতীয় পার্টি ছাড়ার খবর জানার পর জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে কেন তিনি হঠাৎ করে এই দলটি থেকে পদত্যাগ করলেন। মুঠোফোনে আলাপকালে সেই প্রশ্নই ছুড়ে দেয়া হয় জনপ্রিয় এই চিত্রতারকাকে। তিনি বলেন, তৃণমূল কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে জাতীয় পার্টিতে। দেশজুড়ে যারা দলের জন্য নিবেদিত কর্মী, মেধা টাকা পয়সা সব দিয়ে দলের জন্য কাজ করছেন তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। যেটা আমাকে চরমভাবে আঘাত করেছে।
সোহেল রানা বলেন, পার্টিতে এখন যারা নেতৃত্বে রয়েছেন, বলছি না তারা খারাপ, কিন্তু তাদের চেয়েও নিবেদিতপ্রাণ, শিক্ষিত কর্মী দলে ছিল। কিন্তু তাদের প্রতি কোনো দৃষ্টি নেই। তাদের মূল্যায়ন করা হলো না। এ নিয়ে তৃণমূলের কর্মীরাও হতাশ। আমি ব্যথিত। তাই পদত্যাগ করেছি। যাদেরকে নিয়ে দল চালানোর চেষ্টা চলছে সেটা দলের জন্য ভালো হবে না। দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
এছাড়া, জাতীয় পার্টির নিজস্ব স্বকীয়তা নেই বলেও মন্তব্য করেন সোহের রানা।
জাতীয় পার্টি ছাড়লেও রাজনীতির ময়দান থেকে এখনই সরে যাচ্ছেন না বলে জানান এই চলচ্চিত্র তারকা। তিনি বলেন, কখন কী হবে, এটা তো বলা মুশকিল। আমি রাজনীতি সচেতন, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকবে।
সোহেল রানার পদত্যাগ বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, চিঠি আমার হাতে আসেনি, বিষয়টা আমি জানিও না। সোহেল রানা দীর্ঘদিন ধরে জাপার রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, মাসুদ পারভেজের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। চিত্রনায়ক পরিচয়ের বাইরে তিনি প্রযোজক ও পরিচালকও। বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন সোহেল রানা। তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
Leave a Reply