অনলাইন ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক থাকার জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচন-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা গতকাল শুক্রবার রাতে গণভবনে গেলে শেখ হাসিনা এ নির্দেশ দেন।
আওয়ামী লীগের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বৈঠকের পর দলীয় সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় গণভবনে ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের কয়েকজন সমকালকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আগামীকাল রোববার একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা বলেছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনের দিনে করণীয় সম্পর্কে দলের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সম্ভাব্য সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার কথা বলেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতির এই দিকনির্দেশনার কথাই নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি সমকালকে জানান, নির্বাচনের দিন দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী সজাগ থাকবেন।
এ ব্যাপারে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কথা বলেছেন নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। এই নেতাদের মধ্যে দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম জেলা নেতাদের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। সেই বার্তা উপজেলা নেতাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন জেলার নেতারা।
নির্বাচন-সংক্রান্ত ওই বিশেষ বার্তায় রয়েছে- নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পর ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা করবেন নেতাকর্মীরা। বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে মুজিব কোট ও নৌকা প্রতীকের ব্যাজ সংবলিত মাফলার ব্যবহারকারীদের গতিবিধি পরখ করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে সতর্ক পাহারা বসাতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ভোটের ফল না পাওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করা যাবে না।
এদিকে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা নির্বাচন-সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দেলোয়ার হোসেন, প্রকৌশলী আবদুস সবুর, ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, ডা. রোকেয়া সুলতানা, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন, আখতারউজ্জামান, অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হীরু, গোলাম রব্বানী চিনু, অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, আনোয়ার হোসেন, শাহে আলম মুরাদ, হারুনুর রশীদ, মাহমুদা বেগম ক্রিক, অ্যাডভোকেট মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসার, নাজমা আক্তার, গোলাম রাব্বানী ও ডা. ইকবাল আর্সলান।
বৈঠকে নেতারা বলেছেন, জনসমর্থনের পাশাপাশি নির্বাচন-সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের অনুকূলে থাকলেও বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে নানামুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নির্বাচনের দিনে মুজিব কোট ও নৌকা প্রতীকের ব্যাজ সংবলিত মাফলার ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে পারে। এরই মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে মুজিব কোট এবং নৌকা প্রতীকের ব্যাজ সংবলিত মাফলার বানানো হয়েছে। তাই নির্বাচনের দিনে মুজিব কোট ও নৌকা প্রতীকের ব্যাজ সংবলিত মাফলার ব্যবহারকারীদের গতিবিধি পরখ করতে হবে। সূত্র: সমকাল।
Leave a Reply