শিব প্রসাদ মজুমদার রাহুল, কুমিল্লা
কুমিল্লার ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী কালী মাতার মন্দিরে নানা আয়োজনে শুভ মহালয়া অনুষ্ঠিত হয়।
কুমিল্লা মহানগরীর সনামধন্য ৫টি গীতা শিক্ষালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ ও আয়োজনে এই প্রথমবারের মতো কুমিল্লায় মহালয়া প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী গীতা শিক্ষালয়, ত্রিশুল গীতা শিক্ষালয়, চন্দ্রিকা গীতা শিক্ষালয়, শ্রী শ্রী গুপ্ত জগন্নাথ মন্দির গীতা শিক্ষালয় ও নিষ্কাম কর্মযোগ গীতা শিক্ষালয় এর শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় শুরুতে বেদ মন্ত্র,গায়ত্রি মন্ত্র,চন্ডিপাঠ ও মায়ের আগমনী গান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় চন্ডীপুজার মাধ্যমে। চন্ডী ঘট বসিয়ে চন্ডী পূজা হয়। পূজা শেষে সকল ভক্তরা অঞ্জলি নেয় এবং যজ্ঞাদি সম্পূর্নের মাধ্যমে পূজা সমাপ্ত হয়। পূজায় পুরোহিত্ত ছিলেন প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানটি সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রফেসর বিশ্বজিৎ দেব, এডভোকেট স্বর্ণকমল নন্দী পলাশ ও তাপস নাহা।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন অধ্যাপক শ্রী শ্যামা প্রসাদ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা শ্রী শ্রী রাম কৃষ্ণ মিশন এর সহ অধ্যক্ষ রূপম মহারাজ, ইসকন কুমিল্লা জেলার সহ সভাপতি মৃত্যুন্জয় প্রভু, সাবেক জেলা জিপি এডভোকেট তপন বিহারী নাগ, কুমিল্লা মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্ট এর আহবায়ক শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, সদস্য সচিব সন্জিৎ দেবনাথ, কুমিল্লা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নারায়ন চন্দ্র সরকার, কুমিল্লা জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস বকসী, কুমিল্লা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাস টিটু, শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী কালী মাতার মন্দিরের সদস্য বিজয় সাহা, লিটন সাহা, কুমিল্লা জেলা জাগো হিন্দু পরিষদের সভাপতি ও শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী গীতা শিক্ষালয় এর সভাপতি সাগর দাস, সহ সভাপতি দেবাশিষ চক্রবর্তী, সহ সভাপতি বলরাম কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক নীল কমল চক্রবর্তী বিষ্ণু, সাংগঠনিক সম্পাদক শিব প্রসাদ মজুমদার রাহুল, কোষাধ্যক্ষ জামিনী নাথ টিপু, সহ কোষাধ্যক্ষ লিটন দাস, অজিত রায়, পিন্টু রায়, ত্রিশুল গীতা শিক্ষালয় এর সভাপতি আশীষ দাস, সাধারন সম্পাদক অনন্য ভৌমিক, চন্দ্রিকা গীতা শিক্ষালয় এর পরিচালক তিথী চক্রবর্তী, সহ পরিচালক নীলাঞ্জন দাশ, শ্রী শ্রী গুপ্ত জগন্নাথ মন্দির গীতা শিক্ষালয় পরিচালক কেশব চক্রবর্তী, শ্রী শ্রী রাজ রাজেশ্বরী গীতা শিক্ষালয় এর শিক্ষক প্রশান্ত সাহা প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গীতা শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং হাজারো ভক্ত-শ্রোতার।
জানা যায়- আজ বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া।
এদিন থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষের। শ্রী শ্রী চণ্ডী পাঠের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত।
পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এদিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ছয় দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়। আগামি ২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত: মহালয়া থেকেই দুর্গাপূজার আনন্দধ্বনি শোনা যায়। ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীর পর প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে দুর্গোৎসবের। সনাতনীদে কাছে দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত।
পুরাণে আছে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চান। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’ রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও বধ করেন।
Leave a Reply